খারেজী সম্প্রদায় কারা?
খারেজি পরিচয় ও তাদের আকিদা।
খারেজী সম্প্রদায় কারা?
খারেজী সম্প্রদায় কারা?
আভিধানিক অর্থে ‘খারেজী’ শব্দটি আরবী ‘খুরূজ’ (الخروج) শব্দ হ’তে নির্গত, যার অর্থ ‘বের হওয়া বা বেরিয়ে যাওয়া’।
বহুবচনে ‘খাওয়ারিজ’ ব্যবহৃত হয়।
পারিভাষিক অর্থে শাহরাস্তানী (মৃঃ ৫৪৮ হিঃ) এর মতে খারেজী হ’ল- ‘প্রত্যেক এমন ব্যক্তি যে এমন হক ইমামের (শাসক) বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে, যাকে লোকেরা ইমাম হিসাবে স্বীকার করে নিয়েছে।
চাই এই বিদ্রোহ ছাহাবীগণের যুগে হেদায়াতপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদার বিরুদ্ধে হোক বা তাদের পরবর্তী তাবেঈনে এর যুগে কিংবা তৎপরবর্তী যে কোন শাসকের যুগে হোক’।
বহুবচনে ‘খাওয়ারিজ’ ব্যবহৃত হয়।
পারিভাষিক অর্থে শাহরাস্তানী (মৃঃ ৫৪৮ হিঃ) এর মতে খারেজী হ’ল- ‘প্রত্যেক এমন ব্যক্তি যে এমন হক ইমামের (শাসক) বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে, যাকে লোকেরা ইমাম হিসাবে স্বীকার করে নিয়েছে।
চাই এই বিদ্রোহ ছাহাবীগণের যুগে হেদায়াতপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদার বিরুদ্ধে হোক বা তাদের পরবর্তী তাবেঈনে এর যুগে কিংবা তৎপরবর্তী যে কোন শাসকের যুগে হোক’।
ইবনু হাযম আন্দালুসী (রহঃ)-এর সংজ্ঞা অনুযায়ী ‘খারেজী বলতে প্রত্যেক এমন সম্প্রদায়কে বুঝায় যারা চতুর্থ খলীফা আলী (রাঃ)-এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহকারীদের মতামত কিংবা তাদের রায় অবলম্বনকারী, তা যেকোন যুগেই হোক না কেন’। ড. নাছির আল-আক্বল বলেন, ‘খারেজী হচ্ছে, যারা গোনাহের কারণে অন্য মুসলমানকে কাফের বলে এবং মুসলিম শাসক ও সাধারণ লোকজনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে’।
তিনি আরো বলেন, ‘খারেজী’ নামটি যেমন পূর্বের খারেজীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, তেমনি প্রত্যেক এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, যে তাদের নীতি গ্রহণ করে এবং তাদের পন্থা অবলম্বন করে। উপরোক্ত সংজ্ঞা অনুযায়ী তাদের প্রধান দু’টি আলামত বা লক্ষণ হ’ল, তারা কবীরা গোনাহগারকে কাফের বলে এবং মুসলিম শাসকের বিরদ্ধে বিদ্রোহ করে।
তাদেরকে ‘খারেজী’ বলা হয় এজন্য যে, তারা দ্বীন অথবা জামা‘আত অথবা আলী (রাঃ)-এর আনুগত্য থেকে বের হয়ে গিয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, ‘খারেজী’ নামটি যেমন পূর্বের খারেজীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, তেমনি প্রত্যেক এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, যে তাদের নীতি গ্রহণ করে এবং তাদের পন্থা অবলম্বন করে। উপরোক্ত সংজ্ঞা অনুযায়ী তাদের প্রধান দু’টি আলামত বা লক্ষণ হ’ল, তারা কবীরা গোনাহগারকে কাফের বলে এবং মুসলিম শাসকের বিরদ্ধে বিদ্রোহ করে।
তাদেরকে ‘খারেজী’ বলা হয় এজন্য যে, তারা দ্বীন অথবা জামা‘আত অথবা আলী (রাঃ)-এর আনুগত্য থেকে বের হয়ে গিয়েছিল।
রাসূল (সঃ)-এর ভবিষ্যদ্বাণী ও খারেজীদের উত্থান :
ইসলামের প্রথম বাতিল দল হ’ল ‘খারেজী’।
অনেকে মনে করেন খারেজীদের উত্থান রাসূল (সঃ)-এর যুগেই হয়েছিল। কিন্তু তা ছিল ব্যক্তি পর্যায়ের ঘটনা। এর প্রমাণ স্বরূপ তারা ‘যুল খুওয়াইসারা’র ঘটনা উল্লেখ করেন। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন,
অনেকে মনে করেন খারেজীদের উত্থান রাসূল (সঃ)-এর যুগেই হয়েছিল। কিন্তু তা ছিল ব্যক্তি পর্যায়ের ঘটনা। এর প্রমাণ স্বরূপ তারা ‘যুল খুওয়াইসারা’র ঘটনা উল্লেখ করেন। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন,
‘আমরা রাসূল (সঃ)-এর নিকটে উপস্থিত ছিলাম। তিনি কিছু গণীমতের মাল বণ্টন করছিলেন। তখন বনু তামীম গোত্রের ‘যুল খুওয়াইসারা’ নামক এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি ইনছাফ করুন’। তখন রাসূল (সঃ) বললেন, তোমার দুর্ভাগ্য! আমি যদি ইনছাফ না করি, তাহ’লে কে ইনছাফ করবে? আমি যদি ইনছাফ না করি, তাহ’লে তো তুমি ক্ষতিগ্রস্ত ও নিষ্ফল হব। ওমর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) ! আপনি আমাকে অনুমতি দিন, আমি ওর গর্দান উড়িয়ে দেই। তিনি বললেন, ‘ওকে যেতে দাও। তার কিছু সঙ্গী-সাথী রয়েছে। তোমাদের কেউ তাদের সলাতের তুলনায় নিজের সলাত এবং তাদের সিয়ামের তুলনায় নিজের ছিয়ামকে তুচ্ছ মনে করবে।
এরা কুরআন পাঠ করে, কিন্তু কুরআন তাদের কণ্ঠনালীর নিম্নদেশে প্রবেশ করে না।
এরা দ্বীন থেকে এত দ্রুত বেরিয়ে যাবে, যেমন তীর শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায়। তীরের অগ্রভাগের লোহা দেখা যাবে, কিন্তু (শিকারের) চিহ্ন দেখা যাবে না। কাঠের অংশটুকু দেখলে তাতেও কোন কিছুর দেখা মিলবে না। মধ্যবর্তী অংশটুকু দেখলে তাতেও কিছু পাওয়া যাবে না। তার পালক দেখলে তাতেও কোন চিহ্ন পাওয়া যাবে না। অথচ তীরটি শিকারের নাড়িভুঁড়ি ভেদ করে রক্ত-মাংস অতিক্রম করে বেরিয়ে গেছে। এদের নিদর্শন হ’ল এমন একজন কালো মানুষ, যার একটি বাহু নারীর স্তনের ন্যায় অথবা গোশতের টুকরার ন্যায় নড়াচড়া করবে। তারা মানুষের মধ্যে বিরোধ কালে আত্মপ্রকাশ করবে।[1]
এরা কুরআন পাঠ করে, কিন্তু কুরআন তাদের কণ্ঠনালীর নিম্নদেশে প্রবেশ করে না।
এরা দ্বীন থেকে এত দ্রুত বেরিয়ে যাবে, যেমন তীর শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায়। তীরের অগ্রভাগের লোহা দেখা যাবে, কিন্তু (শিকারের) চিহ্ন দেখা যাবে না। কাঠের অংশটুকু দেখলে তাতেও কোন কিছুর দেখা মিলবে না। মধ্যবর্তী অংশটুকু দেখলে তাতেও কিছু পাওয়া যাবে না। তার পালক দেখলে তাতেও কোন চিহ্ন পাওয়া যাবে না। অথচ তীরটি শিকারের নাড়িভুঁড়ি ভেদ করে রক্ত-মাংস অতিক্রম করে বেরিয়ে গেছে। এদের নিদর্শন হ’ল এমন একজন কালো মানুষ, যার একটি বাহু নারীর স্তনের ন্যায় অথবা গোশতের টুকরার ন্যায় নড়াচড়া করবে। তারা মানুষের মধ্যে বিরোধ কালে আত্মপ্রকাশ করবে।[1]
অন্য বর্ণনায় এসেছে,
‘লোকটি চলে যাওয়ার পর রাসূল (সঃ) বললেন, ঐ ব্যক্তির বংশ থেকে এমন কিছু লোক আসবে যারা কুরআন পড়বে, কিন্তু কুরআন তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তারা ইসলাম থেকে এমনভাবে বের হয়ে যাবে যেমন শিকারের দেহ ভেদ করে তীর বের হয়ে যায়। তারা মূর্তিপূজারীদেরকে ছেড়ে দিবে এবং মুসলমানদেরক হত্যা করবে। যদি আমি তাদেরকে পাই তাহ’লে ‘আদ’ জাতির মত তাদেরকে হত্যা করব’।[2]
অন্য বর্ণনায় এসেছে, জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসূল (সঃ)-এর কাছে ‘জি‘রানা’ নামক স্থানে দেখা করে। এটি সেই স্থান যেখানে রাসূল (সঃ) হুনায়নের যুদ্ধে প্রাপ্ত গণীমতের মাল বণ্টন করছিলেন। ছাহাবী বিলাল (রাঃ)-এর কাপড়ের ওপর রূপার টুকরাগুলো রাখা ছিল। রাসূল (ছাঃ) মুষ্ঠিবদ্ধভাবে মানুষকে দান করছিলেন। তখন উপস্থিত ঐ লোকটি বলল, ‘হে মুহাম্মাদ! আপনি আল্লাহ্কে ভয় করুন ও ইনছাফ করুন! রাসূল (সঃ) বললেন, ‘ধ্বংস তোমার জন্য। আমি যদি ইনসাফ না করি তবে কে ইনছাফ করবে? আল্লাহর কসম! আমার পরে তোমরা এমন কোন লোক পাবে না, যে আমার চেয়ে অধিক ন্যায়পরায়ণ হবে’। সঙ্গে সঙ্গে ওমর (রাঃ) বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমাকে অনুমতি দিন, আমি এই মুনাফিকের গর্দান উড়িয়ে দেই’। তিনি বললেন, ‘না, আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই, যদি এমন কর, তবে লোকেরা বলবে, আমি আমার সাথীদের হত্যা করি...’।[3] এই ব্যক্তিই ছিল প্রথম ‘খারেজী’ যে নবী করীম (সঃ)-এর বণ্টনের ব্যাপারে প্রশ্ন তোলে এবং নিজ প্রবৃত্তির রায়কে প্রাধান্য দেয়।
অন্যদিকে ওসমান (রাঃ)-এর হত্যার ষড়যন্ত্রকারী এবং পরে অন্যায়ভাবে তাঁকে হত্যাকারী উচ্ছৃঙ্খল জনতাকেও ত্বাবারী ও ইবনু কাসীর (রহঃ) ‘খারেজী’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে তখনও ‘খারেজী’ একটি পৃথক দল ও মতবাদ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেনি। এই ব্যক্তির বংশধর ও অনুসারীরাই ‘খারেজী’। এরা কেমন হবে? কি করবে? রাসূল (সঃ) এ সম্পর্কে বিস্তারিত ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। তিনি বলেন,
‘শেষ যামানায় এমন এক সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটবে যারা হবে অল্পবয়স্ক যুবক ও নির্বোধ। তারা সৃষ্টির শ্রেষ্ঠতম কথা থেকে আবৃত্তি করবে। অথচ তাদের ঈমান তাদের গলদেশ অতিক্রম করবে না...’।[4]
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, ) অন্যত্র সঃ বলেন,
‘পূর্বাঞ্চল থেকে একদল লোকের আবির্ভাব ঘটবে। তারা কুরআন পাঠ করবে, কিন্তু তা তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তারা দ্বীন থেকে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে, যেভাবে ধনুক শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায়। তারা আর দ্বীনের মধ্যে ফিরে আসবে না, যেমনভাবে ধনুক ছিলায় ফিরে আসে না। বলা হ’ল, তাদের আলামত কি? তিনি বললেন, ‘তাদের আলামত হচ্ছে মাথা মুন্ডন করা’।[5]
মুসলিম উম্মাহকে সতর্ক করে রাসূল (সঃ) আরো বলেন, ‘অদূর ভবিষ্যতে আমার উম্মতের মধ্যে মতানৈক্য ও ফিরক্বা সৃষ্টি হবে। এমতাবস্থায় এমন এক সম্প্রদায় বের হবে, যারা সুন্দর ও ভাল কথা বলবে আর কাজ করবে মন্দ। তারা কুরআন পাঠ করবে, কিন্তু তা তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তারা দ্বীন থেকে এমনভাবে বের হয়ে যাবে, যেমনভাবে তীর শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায়। তারা সৃষ্টির সবচেয়ে নিকৃষ্ট। ঐ ব্যক্তির জন্য সুসংবাদ, যে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে এবং যুদ্ধে তাদের দ্বারা শাহাদত বরণ করবে। তারা মানুষকে আল্লাহর কিতাবের দিকে ডাকবে অথচ তারা আমার কোন আদর্শের উপরে প্রতিষ্ঠিত নয়। যে ব্যক্তি তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে, সে অপরাপর উম্মতের তুলনায় আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয় হবে’। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! তাদের আলামত কী?
তিনি বললেন, ‘অধিক মাথা মুন্ডন করা’।[6]
তিনি বললেন, ‘অধিক মাথা মুন্ডন করা’।[6]
♦রেফারেন্সঃ
[1]. বুখারী হা/৩৬১০;
মুসলিম হা/১০৬৪;
মিশকাত হা/৫৮৯৪।
[2]. বুখারী হা/৭৪৩২;
মুসলিম হা/১০৬৪;
মিশকাত হা/৫৮৯৪।
[3]. মুসলিম হা/১০৬৩; সহীহুল জামে‘ হা/৫৮৭৮।
[4]. বুখারী হা/৬৯৩০; মিশকাত হা/৩৫৩৫।
[5]. বুখারী হা/৭৫৬২।
[6]. আবু দাউদ হা/৪৭৬৫; মিশকাত হা/৩৫৪৩,
সনদ সহীহ।,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,, কিছু দ্ধীনি ভায়ের জন্য এই পোস্ট করতে বাধ্য হলাম।
মুসলিম হা/১০৬৪;
মিশকাত হা/৫৮৯৪।
[2]. বুখারী হা/৭৪৩২;
মুসলিম হা/১০৬৪;
মিশকাত হা/৫৮৯৪।
[3]. মুসলিম হা/১০৬৩; সহীহুল জামে‘ হা/৫৮৭৮।
[4]. বুখারী হা/৬৯৩০; মিশকাত হা/৩৫৩৫।
[5]. বুখারী হা/৭৫৬২।
[6]. আবু দাউদ হা/৪৭৬৫; মিশকাত হা/৩৫৪৩,
সনদ সহীহ।,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,, কিছু দ্ধীনি ভায়ের জন্য এই পোস্ট করতে বাধ্য হলাম।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন