জামাতে নামাজ রত অবস্থায় মোবাইলে 📱 রিং বাজলে করনীয়।

★★★ জামাতে নামাজ রত অবস্থায় মোবাইলে 📱 রিং বাজলে তা এক হাতে বন্ধ করতে হবে কেননা এতে অপর  মুসল্লীদের নামাজে  ও  তেলাওয়াত শুনতে বিগ্ন ঘঠে ও নামাজে অমনুযোগিতা আসে। তাই এক হাত বেধেঁ রেখে অপর হাত দারা মোবাইল সাইলেন্ট বা রিং বন্ধ করলে নামাজ ভংগ হবে না।

  🌴 একদা মহানবী (সাঃ) স্বগৃহে দরজার খিল বন্ধ করে নফল নামায পড়ছিলেন। মা আয়েশা رضي الله عنها  এসে দরজা খুলতে বললে তিনি চলে গিয়ে তাঁর জন্য দরজা খুলে দিলেন। অতঃপর পুনরায় নিজের মুসাল্লায় ফিরে গেলেন। অবশ্য দরজা ছিল কিবলার দিকেই। (আহমাদ, মুসনাদ ৬/২৩৪, আবূদাঊদ, সুনান ৯২২, তিরমিযী, সুনান ৬০১, নাসাঈ, সুনান, ইবনে হিব্বান, সহীহ, আবূ য়্যা’লা ৪৪০৬, দারাক্বুত্বনী, সুনান, বায়হাকী ২/২৬৫, মিশকাত ১০০৫ নং)

  🌴 একদা বানী মুত্তালিবের দু’টি ছোট  মেয়ে মারামারি করতে করতে মহানবী (সাঃ) এর সামনে এসে তাঁর হাঁটু ধরে ফেলল। তিনি নামায পড়ছিলেন। সেই অবস্থায় তিনি উভয়কে দু’দিকে সরিয়ে দিলেন। (আবূদাঊদ, সুনান ৭১৬, ৭১৭, সহিহ,নাসাঈ, সুনান ৭২৭ নং)

★★★ ইমামের পূর্বে মাথা উঠানো হারাম।

 🌴 নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যখন ইমামের পূর্বে মাথা উঠিয়ে ফেলে, তখন সে কি ভয় করে না যে, আল্লাহ্ তা‘আলা তার মাথা গাধার মাথায় পরিণত করে দিবেন, তার আকৃতি গাধার আকৃতি করে দেবেন।

★★★ রুকু সেজদাহ করার নিয়ম ও সাহাবীদের আসর :-
 
 🌴 আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ  বলার পর যতক্ষণ পর্যন্ত সাজদাহ্য় না যেতেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কেউ পিঠ বাঁকা করতেন না। তিনি সাজদাহ্য় যাওয়ার পর আমরা সাজদাহয় যেতাম।

 🌴 নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাজদাহ্, রুকূ‘ এবং দু’ সাজদাহর মধ্যে বসা প্রায় সমান (সময়ের) হতো।

 🌴  দুই সিজদার মধ্যবর্তী বৈঠকের দোয়া:-

رَبِّ اغْفِرْ لِي، رَبِّ اغْفِرْ لِي

হে আমার রব্ব! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন। হে আমার রব্ব! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।

রব্বিগফির লী, রব্বিগফির লী

  🌴 যায়দ ইবনু ওয়াহ্ব (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুযাইফা (রাযি.) এক ব্যক্তিকে দেখলেন যে, সে রুকূ‘ ও সাজদাহ্ ঠিকমত আদায় করছে না। তিনি তাকে বললেন, তোমার সালাত হয়নি। যদি তুমি (এই অবস্থায়) মারা যাও, তাহলে আল্লাহ্ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে যে আদর্শ দিয়েছেন সে আদর্শ হতে বিচ্যুত অবস্থায় তুমি মারা যাবে।

  🌴 বারাআ (রাযি.) হতে বর্ণিত। আর তিনি মিথ্যাবাদী ছিলেন না, তাঁরা যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে সালাত আদায় করতেন, তখন রুকূ‘ হতে মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দেখতেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাজদাহ্য় গেছেন।

★★★ সেজদায় হাতের কুনুই মাটিতে বিছেয়ে না দেওয়া।

    🌴 নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাজদাহ্য় (অঙ্গ প্রত্যঙ্গের) সামঞ্জস্য রক্ষা কর এবং তোমাদের মধ্যে কেউ যেন দু’ হাত বিছিয়ে না দেয়, যেমন কুকুর বিছিয়ে দেয়।

★★★ ফরজ নামজে দাড়ানোর পূর্বে ঘড়ি দেখে সুন্নাতের নিয়ত করুন। ফরজ নামাজের পূর্বে সুন্নাত পড়তে না পারলে তা ফরজ নামাজের পর আদায় করুন।

★ মসজিদের আদব হচ্ছে তাহিয়াতুল মসজিদের ২ রাকত নামাজ পড়া বা সুন্নাত না পড়ে না বসা,  সময় অল্প বাকি থাকলে ২ রাকাত তাহিয়াতুল মসজিদের নামাজ পড়তেছি বলে নিয়ত করে পড়ে ফেলুন।

★ অযূ শুরু করার  পূর্বে " বিসমিল্লাহ " বলা এবং অযূর শেষে বলবে..

 ‘‘আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়া আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহূ ওয়া রসূলুহ’’,

 আর এক বর্ণনায় আছেঃ

‘‘আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্‌দাহূ লা- শারীকা লাহূ ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহূ ওয়া রসূলুহ’’-

  যে এরুপ পড়বে তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে যাবে। এসব দরজার যেটি দিয়ে খুশী সে সেই দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।

★★★ প্রত্যেক ফরজ নামজ এর পড়ে জিকির করা রাসূল সাঃ এর গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত।

 🌴 ইবনু আব্বাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বর্ণনা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সময় মুসল্লীগণ ফরজ সালাত শেষ হলে উচ্চৈঃস্বরে যিকর করতেন। ইবনু ‘আববাস (রাযি.) বলেন, আমি এরূপ শুনে বুঝতাম, মুসল্লীগণ সালাত শেষ করেছেন।

রাসূল সাঃ ফরজ নামাজর শেষে সালাম ফিরানুর পর পড়তেন...

 ★    “আসতাগফিরুল্লা-হ” – ৩ বার ।

أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ

অর্থঃ হে আল্লাহ!আমি তোমার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করছি।

★ সুবাহান আল্লাহ (৩৩ বার) , আলহামদুলিল্লাহ (৩৩ বার), আল্লাহু-আকবার (৩৪ বার)।

 ★  “আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম ওয়া মিনকাস সালাম, তাবা-রাকতা ইয়া যাল-জালা-লী ওয়াল ইকরাম” – ১ বার।

اللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلاَمُ، وَمِنْكَ السَّلاَمُ، تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجَلاَلِ وَالْإِكْرَامِ

★  “লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দা’হু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকুওয়া লাহুল হা’মদু, ওয়া হুয়া আ’লা কুল্লি শাইয়িনক্বাদীর” – ১ বার। (মুসলিম ১২৪০)

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَـرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ

 ★ আয়াতুল কুরসী  ১ বার পাঠ করা

আবু উমামা(রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
“যেব্যক্তি প্রত্যেক ফরয সালাতের পর ‘আয়াতুল কুরসী পাঠ করে মৃত্যু ছাড়া আর কিছুই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করা থেকে বিরত রাখতে পারবেনা”।

    আরো বিভিন্ন জিকির সমূহ রাসূল (সাঃ) নামাজ শেষে পড়তেন।

  ★ প্রতিদিনের আমল :-

 ★ যে লোক প্রতিদিন একশ’বার
" সুবাহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহ " বলবে তার গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে তা সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হলেও।

سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ

আমি আল্লাহর প্রশংসাসহ পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি।

★ যে  ব্যক্তি দিনের মধ্যে একশ’ বার পড়বে,  “লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দা’হু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকুওয়া লাহুল হা’মদু, ওয়া হুয়া আ’লা কুল্লি শাইয়িনক্বাদীর”। পড়বে

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهْوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِير

 সে একশ’ গোলাম মুক্ত করার সাওয়াব লাভ করবে এবং তার জন্য একশ’টি নেকী লেখা হবে, আর তার একশ’টি গুনাহ মিটিয়ে দেয়া হবে। আর সে দিন সন্ধ্যা অবধি এটা তার জন্য রক্ষাকবচ হবে এবং তার চেয়ে অধিক ফাযীলাতপূর্ণ ‘আমাল আর কারো হবে না। তবে সে ব্যক্তি ছাড়া যে ব্যক্তি এ ‘আমাল তার চেয়েও অধিক করবে।

★  যে ব্যাক্তী প্রতি রাতে সূরা মূলক পাঠ করবে সে কবরের আযাব থেকে ক্ষমা পাবে।
 ‘কুরআনের তিরিশ আয়াতবিশিষ্ট একটি সূরা এমন আছে , যা তার পাঠকারীর জন্য সুপারিশ করবে এবং শেষাবধি তাকে ক্ষমা করে দেয়া হবে,সেটা হচ্ছে ‘তাবা-রাকাল্লাযী বিয়্যাদিহিল মূলক’ (সূরা মূলক)  (আবূ দাউদ ১৪০০)।

★ কেউ যদি রাতে সূরাহ বাকারার শেষ দু’টি আয়াত পাঠ করে, সেটাই তার জন্য যথেষ্ট।
 অর্থাৎ রাত্রে কুরআন মাজীদ তেলাওয়াত করার যে হাক রয়েছে, কমপক্ষে সূরাহ বাকারার শেষ দু’টি আয়াত তেলাওয়াত করলে তার জন্য তা যথেষ্ট।

★★★ ঘুমানোর পর্বের কিছু আমল,

 ‘তোমরা যা চেয়েছ, আমি কি তোমাদের তার চেয়ে উত্তম জিনিসের সন্ধান দিব না? যখন তোমরা বিছানায় যাবে, তখন চৌত্রিশ বার ‘আল্লাহু আকবার’ তেত্রিশবার ‘আল্হামদু লিল্লাহ’ এবং তেত্রিশবার ‘সুব্হানাল্লাহ’ বলবে, এটাই তোমাদের জন্য তার চেয়ে উত্তম, যা তোমরা চেয়েছ।

★  যখন তুমি বিছানায় শুতে যাবে, তখন আয়াতুল কুরসী পড়বে। তাহলে সর্বদা আল্লাহর পক্ষ হতে তোমার জন্য একজন হিফাযতকারী থাকবে এবং সকাল হওয়া অবধি তোমার নিকট শয়তান আসতে পারবে না।

اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ

(আল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যূল কাইয়্যূমু লা তা’খুযুহু সিনাতুঁও ওয়ালা নাউম। লাহূ মা-ফিসসামা-ওয়া-তি ওয়ামা ফিল আরদ্বি। মান যাল্লাযী ইয়াশফা‘উ ‘ইনদাহূ ইল্লা বিইযনিহী। ইয়া‘লামু মা বাইনা আইদীহিম ওয়ামা খালফাহুম। ওয়ালা ইয়ুহীতূনা বিশাইইম মিন্ ইলমিহী ইল্লা বিমা শাআ। ওয়াসি‘আ কুরসিয়্যুহুস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্ব। ওয়ালা ইয়াউদুহূ হিফযুহুমা ওয়া হুয়াল ‘আলিয়্যূল ‘আযীম)।

★ ডান কাতে হয়ে শুয়া এবং ১ বার পড়া

 : আল্লাহুম্মা বিসমিকা আ’মু-তু ওয়া আ’হইয়া।

 ‘হে আল্লাহ! তোমারই নামে আমি মৃত্যুবরণ করছি এবং তোমারই অনুগ্রহে জীবিত হব।

★★★ পেশাব বা পায়খানায় ঢুকার সময় এই দোয়াটি পড়বে –

اَللهُمَّ إِنّيْ أَعًوْذُ بِكَ مِنَ الْخُبْثِ وَ الْخَبَائِث
ِ
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল খুবসী ওয়াল খাবায়িস।

অর্থ, হে আল্লাহ, আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুষ্ট পুরুষ জ্বিন ও দুষ্ট নারী জ্বিনের অনিষ্ট থেকে।

★ পেশাব বা পায়খানা থেকে বের হওয়ার সময় পড়বে:-

غَُفْرَانَكَ

  " গুফরানাকা "

অর্থ, আমি আপনার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিতেছি।

  ★★★ উপরে উল্লেখিত আমলগুলো সহিহ হাদীস ধারা প্রমানিত এবং আমরা যার যার সাধ্যনুযায়ী আমলগুলো নিয়মিত করার চেষ্টা করব
ইনশাআল্লাহ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনা গন্ডা সম্পর্কিত তথ্য

খারেজী সম্প্রদায় কারা?

কাকড়া খাওয়া হারাম না হালাল?