দেনমহর

কুতায়বাহ ইবনু সাঈদ আস্ সাকাফী ও কুতায়বাহ (রহিমাহুমাল্লাহ) ..... সাহল ইবনু সাদ আস্ সাইদী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈকা মহিলা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললঃ হে আল্লাহর রসূল! আমি নিজেকে আপনার জন্য হিবা করছি। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে লক্ষ্য করলেন এবং দৃষ্টি উপরের দিকে উঠিয়ে নিচে নামালেন। অতঃপর তিনি তার শির মুবারক নত করলেন। মহিলা যখন বুঝতে পারল যে, তার সম্বন্ধে কোন সিদ্ধান্তে পৌছেননি, তখন সে বসে পড়ল। অতঃপর জনৈক সাহাবী দাঁড়িয়ে আরয করল, হে আল্লাহর রসূল! যদি আপনার প্রয়োজন না হয় তাহলে তাকে আমার সাথে বিবাহ দিয়ে দিন। তিনি বললেন, তোমার কাছে কি কিছু আছে? সাহাবী বললেন, না, আল্লাহর কসম হে আল্লাহর রসূল! তিনি বললেন, তুমি বাড়ী যাও দেখ, কোন কিছু পাও কিনা।

সাহাবী বাড়ি গিয়ে আবার ফিরে এসে বলল, আল্লাহর কসম, আমি বাড়িতে কোন কিছুই পাইনি। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ দেখ, লোহার আংটি হলেও (পাও কিনা)। সাহাবী আবার গেল এবং ফিরে এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহর কসম, আমি লোহার একটি আংটিও পাইনি। তবে আমার এ লুঙ্গিটি আছে। (বর্ণনাকারী) সাহল (রাযিঃ) বলেন, তার চাঁদরও ছিল না- যাতে অর্ধেক মহিলাটির জন্য হয়। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তোমার লুঙ্গি দ্বারা কী করবে? তা যদি তুমি পর তাহলে স্ত্রীর জন্য সেটির কোন অংশ অবশিষ্ট থাকবে না। আর যদি সে তা পরিধান করে তাহলে (তোমার জন্য) সেটির কোন অংশ অবশিষ্ট থাকবে না।

এরপর সে ব্যক্তি বসে রইল। অনেক ক্ষণ বসার পর উঠে গেল। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ফিরে যেতে দেখে ডেকে পাঠালেন। যখন সে এল রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কুরআনের কোন অংশ তোমার জানা আছে? উত্তরে সে বললঃ অমুক সূরা, অমুক সূরা আমার জানা আছে। এভাবে সে সূরাগুলোর সংখ্যা বলে দিল। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি কি এগুলো মুখস্থ পাঠ করতে পার? সাহাবী বলল, হাঁ। তিনি বললেন, যাও, তোমাকে এসব সূরার কারণে এ মহিলাকে তোমার অধিকারে দিয়ে দিলাম।[সহিহ মুসলিমঃ১৪২৫, ইঃফাঃ৩৩৫২, সহিহ বুখারীঃ২৩১০,৫০২৯, ৫০৩০, ৫০৮৭,৫১২১, ৫১২৬, ৫১৩২, ৫১৩৫, ৫১৪১, ৫১৪৯, ৫৮৭১, আবূ দাঊদ ২১১১]


যায়িদাহ এর হাদীসে রয়েছে, “নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি যাও, আমি তোমার সাথে একে বিবাহ দিলাম। তুমি তাকে কুরআন শিক্ষা দাও।”[সহিহ মুসলিম ইঃফাঃ৩৩৫৭]

তিরমিযী(১১১৪) থেকে এই হাদীস অনুযায়ী ইমাম শাফিঈ মত প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, বিয়ের জন্য কোন লোকের নিকটে যদি মোহর আদায়ের মত কিছু না থাকে এবং যদি সে লোক কোন নারিকে কুরআনের কোন সুরার বিনিময়ে বিয়ে করে তবে তা জায়িয হবে। তার কর্তব্য হবে ঐ মহিলাকে সে সূরাটি শিখিয়ে দেয়া। কুফাবাসী আলিমগণ এবং আহমাদ ও ইসহাক বলেছেন, বিয়ে জায়িয হবে ঠিকই, কিন্তু তাকে ‘মোহরে মিসাল পরিশোধ করতে হবে।

লোকটির কাছে কোনো কিছুই যখন নেই তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কাছে কুরআনের কিছু মুখস্থ আছে কি? লোকটি বললেন হ্যাঁ, অমুক সূরা মুখস্থ আছে। ইমাম মালিক-এর বর্ণনায় ঐগুলোর নাম উল্লেখ রয়েছে। সুনানু আবী দাঊদে আবূ হুরায়রাহ্ প্রমুখাৎ বর্ণিত, সূরা আল বাকারা এবং তৎসংশ্লিষ্ট সূরার কথা উল্লেখ হয়েছে। এছাড়া দারাকুত্বনীতে মুফাসসাল সূরাসমূহের কথা এবং আবিশ্ শায়খে ইন্না আ‘ত্বয়নাকাল কাওসার-এর কথা এসেছে

ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, কুরআন শিক্ষা দেয়া যে মোহর হতে পারে  এবং কুরআন শিক্ষার বিনিময় নেয়া জায়িয- এ হাদীস তার দলীল। একদল অবশ্য এটা নিষেধ করেন, তাদের মধ্যে ইমাম আবূ হানীফাহ্ও রয়েছেন।[শারহে মুসলিম ৯/১০ম খন্ড, হাঃ ১৪২৫; মিরকাতুল মাফাতীহ]

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনা গন্ডা সম্পর্কিত তথ্য

খারেজী সম্প্রদায় কারা?

কাকড়া খাওয়া হারাম না হালাল?