জিহাদ শব্দের শাব্দিক বিশ্লেষণ
🖋 জিহাদ শব্দের শাব্দিক বিশ্লেষণ
.
জিহাদ (ﺟِﻬَﺎﺩ) শব্দটি ( ﺝ ﻩ ﺩ ) ধাতু থেকে এসেছে। যা এ তিনটি ধাতু দিয়ে কুরআনে ৪১ বার এসেছে। form III verb ﺟَﺎﻫَﺪَ (জা-হাদা) রূপে এসেছে ২৭ (সাতাশ) বার। Noun ﺟِﻬَﺎﺩ (জিহাদ) রূপে এসেছে ৪ (চার) বার। Noun ﺟُﻬْﺪ (জুহদ) রূপে এসেছে ১ (এক) বার। Noun ﺟَﻬْﺪ (জাহদ) রূপে এসেছে ৫ (পাঁচ) বার। form III active participle ﻣُﺠَﺎﻫِﺪ (মুজাহেদ) রূপে এসেছে ৪ (চার) বার।
এর মাদ্বি (অতীত কাল) এর ছিগা হল ﺟَﻬَﺪَ (জাহাদা) এবং মুদ্বারি (বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কাল) এর ছিগা হল ﻳَﺠْﻬَﺪُ (ইয়াজহাদু) অর্থ চেষ্টা করা, পরিশ্রম করা, কষ্ট করা, কষ্ট দেওয়া, ক্লান্ত করা। এর active participle ﺟَﺎﻫِﺪ (জাহিদ) অর্থ চেষ্টাকারী, প্রচেষ্টাকারী, পরিশ্রমী। এর Noun ﺟُﻬْﺪ (জুহদ) অর্থ সাধ্য, সামর্থ্য, শক্তি, ক্ষমতা, কষ্ট, ক্লান্তি, পরিশ্রম প্রচেষ্টা। Verval Noun ﺟَﻬْﺪ (জাহদ) এর অর্থ প্রচেষ্টা, উদ্যোগ, পরিশ্রম, কষ্ট, ক্লান্তি।
এর form III মাদ্বি (অতীত কাল) এর ছিগা হল ﺟَﺎﻫَﺪَ (জা-হাদা) এবং form III মুদ্বারি (বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কাল) এর ছিগা হল ﻳُﺠَﺎﻫِﺪُ (ইউজা-হেদু) অর্থ চেষ্টা করা, সাধনা করা, সংগ্রাম করা, জিহাদ করা। এর noun ﺟِﻬَﺎﺩ (জিহাদ) অর্থ জেহাদ, ন্যায়ের জন্য সংগ্রাম, প্রচেষ্টা, সাধনা, যুদ্ধ। form III active participle ﻣُﺠَﺎﻫِﺪ (মুজাহেদ) অর্থ ন্যায়ের জন্য সংগ্রামকারী, জেহাদকারী, মুজাহিদ, সংগ্রামী।
.
ইসলামী পরিভাষায় জিহাদ(جِهَاد) অর্থ: আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার জন্য বাতিলের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো’।
.
মুশরিক ও কুফরী শক্তির বিরুদ্ধে মুমিনের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নিয়োজিত করাকে ‘জিহাদ’ বলে। জিহাদ হলো ইসলামের সর্বোচ্চ চূড়া।
.
ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেন,
ﺍﻟْﺠِﻬَﺎﺩُ ﺷَﺮْﻋًﺎ ﺑَﺬْﻝُ ﺍﻟْﺠُﻬْﺪِ ﻓِﻲ ﻗِﺘَﺎﻝِ ﺍﻟْﻜُﻔَّﺎﺭِ ﻭَﻳُﻄْﻠَﻖُ ﺃَﻳْﻀًﺎ ﻋَﻠَﻰ ﻣُﺠَﺎﻫَﺪَﺓِ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲِ ﻭَﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥِ ﻭَﺍﻟْﻔُﺴَّﺎﻕِ
শারঈ পরিভাষায় জিহাদ (ﺟِﻬَﺎﺩ) হলো, কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নিয়োজিত করা। এর দ্বারা নফস, শয়তান ও ফাসিকদের বিরুদ্ধে জিহাদকেও বুঝানো হয়। [আহমাদ ইবনু হাজার আসক্বালানী, ফাৎহুল বারী শরহ ছহীহুল বুখারী (কায়রো : ১৪০৭/১৯২৭) ‘জিহাদ’ অধ্যায় ৬/৫ পৃঃ।]
.
মোল্লা আলী ক্বারী (রহঃ) বলেন, জিহাদ(ﺟِﻬَﺎﺩ) অর্থ কাফেরদের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো অথবা মাল দ্বারা, পরামর্শ দ্বারা, দলবৃদ্ধি দ্বারা কিংবা অন্য যেকোন পন্থায় কুফরী শক্তির বিরুদ্ধে সার্বিক সহযোগিতা করা। তিনি বলেন, জিহাদ (ﺟِﻬَﺎﺩ) হলো ‘ফরযে কিফায়াহ’। কেউ সেটা করলে অন্যের উপর থেকে দায়িত্ব নেমে যায়। [মোল্লা আলী ক্বারী, মিরক্বাত শরহ মিশকাত (মুলতান : ইশ‘আতুল মা‘আরেফ, ১৩৮৬/১৯৬৬) ‘জিহাদ’ অধ্যায়, ৭/২৬৪ পৃঃ।)]
.
🗒জিহাদের প্রকারভেদ
.
জিহাদকে ৩টি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে।
.
(১) নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ 📌
.
মহান আল্লাহর বাণী-
ﻭَﻣَﻦْ ﺟَﺎﻫَﺪَ ﻓَﺈِﻧَّﻤَﺎ ﻳُﺠَﺎﻫِﺪُ ﻟِﻨَﻔْﺴِﻪِ ۚ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻟَﻐَﻨِﻲٌّ ﻋَﻦِ ﺍﻟْﻌَﺎﻟَﻤِﻴﻦَ
আর যে (জিহাদ করে) চেষ্টা-সাধনা করে সে তো তার নাফসের জন্য (জিহাদ করে) চেষ্টা-সাধনা করে; নিশ্চয় আল্লাহ সৃষ্টি জগত থেকে প্রয়োজনমুক্ত। (আনকাবুত, ২৯/৬)
.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন;
ﺍَﻓْﻀَﻞُ ﺍﻟْﺠِﻬَﺎﺩِ ﻣَﻦْ ﺟَﺎﻫَﺪَ ﻧَﻔْﺴَﻪُ ﻓِﻲْ ﺫَﺍﺕِ ﺍﻟﻠﻪ ﻋَﺰَّ ﻭَ ﺟَﻞَّ
সর্বশ্রেষ্ঠ জিহাদ হল, মহিমান্বিত ও সম্মানিত মহান আল্লাহর জন্য স্বীয় নাফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করা। (তিরমিযী,; ত্বাবারানী,; সিলসিলা ছহীহা: হা/১৪৯১)
.
ﺃَﻓْﻀَﻞُ ﺍﻟْﺠِﻬَﺎﺩِ ﺃَﻥْ ﻳُﺠَﺎﻫِﺪَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﻧَﻔْﺴَﻪُ ﻭَﻫَﻮَﺍﻩُ
কোন ব্যক্তির স্বীয় নাফস ও কু-প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে জিহাদ করাই হল সর্বোত্তম জিহাদ। (ছহীহুল জামে: হা- ১০৯৯)
.
ফাযালাহ বিন ওবায়েদ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
ﺍﻟْﻤُﺠَﺎﻫِﺪُ ﻣَﻦْ ﺟَﺎﻫَﺪَ ﻧَﻔْﺴَﻪُ ﻟِﻠَّﻪِ
মুজাহিদ সেই ব্যক্তি যে আল্লাহর জন্য স্বীয় নাফসের বিরুদ্ধে (জিহাদ করে) চেষ্টা-সাধনা করে। (তিরমিযী হা/১৬২১, আহমাদ: হা/২২৮২৬; ইবনু হিববান: হা/৪৬২৪)
.
ছাহেবে তুহফাহ বলেন, এর অর্থ, যে ব্যক্তি তার প্রবৃত্তিকে দমন করে এবং পাপ থেকে বিরত হয়ে আল্লাহর আনুগত্যে নিজেকে ধরে রাখে। আর এটাই হ’ল সকল জিহাদের মূল ( ﻭﺟﻬﺎﺩﻫﺎ ﺍﺻﻞ ﻛﻞ ﺟﻬﺎﺩ )। কেননা যে ব্যক্তি নিজের নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করতে পারে না, সে ব্যক্তি বাইরে শত্রুর বিরুদ্ধে জিহাদ করতে পারে না’। (তুহফাতুল আহওয়াযী শরহ তিরমিযী, হা/১৬৭১-এর ব্যাখ্যা)
.
মহান আল্লাহর বানী-
ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺟَﺎﺀَﺕِ ﺍﻟﻄَّﺎﻣَّﺔُ ﺍﻟْﻜُﺒْﺮَﻯ ﻳَﻮْﻡَ ﻳَﺘَﺬَﻛَّﺮُ ﺍﻹﻧْﺴَﺎﻥُ ﻣَﺎ ﺳَﻌَﻰ ﻭَﺑُﺮِّﺯَﺕِ ﺍﻟْﺠَﺤِﻴﻢُ ﻟِﻤَﻦْ ﻳَﺮَﻯ ﻓَﺄَﻣَّﺎ ﻣَﻦْ ﻃَﻐَﻰ ﻭَﺁﺛَﺮَ ﺍﻟْﺤَﻴَﺎﺓَ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟْﺠَﺤِﻴﻢَ ﻫِﻲَ ﺍﻟْﻤَﺄْﻭَﻯ ﻭَﺃَﻣَّﺎ ﻣَﻦْ ﺧَﺎﻑَ ﻣَﻘَﺎﻡَ ﺭَﺑِّﻪِ ﻭَﻧَﻬَﻰ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲَ ﻋَﻦِ ﺍﻟْﻬَﻮَﻯ ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﻫِﻲَ ﺍﻟْﻤَﺄْﻭَﻯ
অতঃপর যখন মহাবিপর্যয় (কেয়ামত) উপস্থিত হবে, সেদিন মানুষ যা করেছে তা স্মরণ করবে, আর দর্শকদের জন্য জাহান্নামকে প্রকাশ করা হবে। অতঃপর যে ব্যক্তি সীমালংঘন করেছে, আর দুনিয়ার জীবনকে অগ্রাধিকার দিয়েছে, নিশ্চয় জাহান্নাম হবে তার আবাসস্থল। পক্ষান্তরে যে তার রবের সামনে দাঁড়াতে ভয় করেছে এবং প্রবৃত্তি (খেয়াল-খুশী) হতে নাফসকে (নিজেকে) বিরত রেখেছে তবে অবশ্যই জান্নাত হবে তার আবাসস্থল। [আন-নাযি’আত, ৭৯/৩৪-৪১]
.
(২) শয়তানের বিরুদ্ধে জিহাদ 📚
.
শয়তান জিন ও ইনসান উভয়ের মধ্য থেকে হ’তে পারে (নাস ১১৪/৬)।
এদের দিনরাতের কাজ হ’ল বিভিন্ন ধোঁকার মাধ্যমে মুমিনকে পথভ্রষ্ট করা। আল্লাহ বলেন,
ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﻳُﻘَﺎﺗِﻠُﻮﻥَ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻛَﻔَﺮُﻭﺍ ﻳُﻘَﺎﺗِﻠُﻮﻥَ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻄَّﺎﻏُﻮﺕِ ﻓَﻘَﺎﺗِﻠُﻮﺍ ﺃَﻭْﻟِﻴَﺎﺀَ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥِ ﺇِﻥَّ ﻛَﻴْﺪَ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥِ ﻛَﺎﻥَ ﺿَﻌِﻴﻔًﺎ
যারা ঈমান এনেছে তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে আর যারা কুফরী করেছে তারা তাগূতের পথে লড়াই করে সুতরাং তোমরা লড়াই কর শয়তানের বন্ধুদের বিরুদ্ধে, নিশ্চয় শয়তানের চক্রান্ত দুর্বল। আন-নিসা, ৪/৭৬
.
ﻭَﻛَﺬَﻟِﻚَ ﺟَﻌَﻠْﻨَﺎ ﻟِﻜُﻞِّ ﻧَﺒِﻲٍّ ﻋَﺪُﻭًّﺍ ﺷَﻴَﺎﻃِﻴﻦَ ﺍﻟْﺈِﻧْﺲِ ﻭَﺍﻟْﺠِﻦِّ ﻳُﻮﺣِﻲ ﺑَﻌْﻀُﻬُﻢْ ﺇِﻟَﻰ ﺑَﻌْﺾٍ ﺯُﺧْﺮُﻑَ ﺍﻟْﻘَﻮْﻝِ ﻏُﺮُﻭﺭًﺍ
‘এমনিভাবে আমরা প্রত্যেক নবীর জন্য শত্রু নিযুক্ত করেছি মানুষ ও জিন থেকে একদল শয়তানকে। যারা ধোঁকা দেওয়ার জন্য একে অপরকে কারুকার্য খচিত কথা বলে’ (আন‘আম ৬/১১২)।
.
এদের থেকে বেঁচে থাকার জন্য আল্লাহ স্বীয় রাসূলকে বলেন,
ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺭَﺃَﻳْﺖَ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﺨُﻮﺿُﻮﻥَ ﻓِﻲ ﺁﻳَﺎﺗِﻨَﺎ ﻓَﺄَﻋْﺮِﺽْ ﻋَﻨْﻬُﻢْ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﺨُﻮﺿُﻮﺍ ﻓِﻲ ﺣَﺪِﻳﺚٍ ﻏَﻴْﺮِﻩِ
‘যখন তুমি ঐসব লোকদের দেখবে যে, আমার আয়াত সমূহে ছিদ্রান্বেষণে লিপ্ত হয়েছে, তখন তুমি তাদেরকে এড়িয়ে চলো, যে পর্যন্ত না তারা অন্য কথায় লিপ্ত হয়’ (আন‘আম ৬/৬৮)।
.
(৩) কাফির-মুশরিক ও ফাসিক-মুনাফিকের বিরুদ্ধে জিহাদ ⚔
.
আল্লাহ বলেন,
ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺟَﺎﻫِﺪِ ﺍﻟْﻜُﻔَّﺎﺭَ ﻭَﺍﻟْﻤُﻨَﺎﻓِﻘِﻲﻥَ ﻭَﺍﻏْﻠُﻆْ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ ﻭَﻣَﺄْﻭَﺍﻫُﻢْ ﺟَﻬَﻨَّﻢُ ﻭَﺑِﺌْﺲَ ﺍﻟْﻤَﺼِﻴﺮُ
‘হে নবী! তুমি জিহাদ কর কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে এবং তাদের উপরে কঠোর হও। ওদের ঠিকানা হ’ল জাহান্নাম। আর কতইনা মন্দ ঠিকানা সেটি’ (তওবা ৯/৭৩; তাহরীম ৬৬/৯)।
.
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, কাফিরদের বিরুদ্ধে জিহাদ হবে অস্ত্রের দ্বারা এবং মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ হবে যবান দ্বারা এবং অন্যান্য পন্থায় কঠোরতা অবলম্বনের দ্বারা’।
.
মুনাফিক সর্দার আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইকে সকল নষ্টের মূল জেনেও রাসূল (ছাঃ) তাকে হত্যার নির্দেশ দেননি তার বাহ্যিক ইসলামের কারণে।
ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ কর হাত দ্বারা, না পারলে যবান দ্বারা, না পারলে ওদেরকে এড়িয়ে চল’। ইবনুল ‘আরাবী বলেন, যবান দ্বারা দলীল কায়েম করার বিষয়টি হ’ল স্থায়ী জিহাদ’। [কুরতুবী, সূরা তওবা ৭৩ আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য; ৮/১৮৭ পৃঃ।]
.
📜 জিহাদের মাধ্যম চারটি :
.
(১) অন্তর দিয়ে (২) যবান দিয়ে (৩) মাল দিয়ে এবং (৪) অস্ত্রের মাধ্যমে।
.
আল্লাহর বাণী মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া জিহাদের একটি অংশ আর এটাকে ‘বড় জিহাদ’ হিসাবে উল্লেখ করে হয়েছে। আল্লাহ স্বীয় রাসূলকে বলেন,
ﻓَﻼَ ﺗُﻄِﻊِ ﺍﻟْﻜَﺎﻓِﺮِﻳْﻦَ ﻭَﺟَﺎﻫِﺪْ ﻫُﻢْ ﺑِﻪِ ﺟِﻬَﺎﺩًﺍ ﻛَﺒِﻴْﺮًﺍ
তুমি কাফিরদের আনুগত্য করো না। বরং তাদের বিরুদ্ধে কুরআন দ্বারা বড় জিহাদ চালিয়ে যাও।। (ফুরক্বান ২৫/৫২)
.
আল্লাহ বলেন-
ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﺑِﺎﻟﻠﻪِ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟِﻪِ ﺛُﻢَّ ﻟَﻢْ ﻳَﺮْﺗَﺎﺑُﻮﺍ ﻭَﺟَﺎﻫَﺪُﻭﺍ ﺑِﺄَﻣْﻮَﺍﻟِﻬِﻢْ ﻭَﺃَﻧْﻔُﺴِﻬِﻢْ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺃُﻭﻟَﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﺍﻟﺼَّﺎﺩِﻗُﻮﻥ
‘মুমিন কেবল তারাই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান এনেছে, অতঃপর তাতে সন্দেহ পোষণ করেনি। আর নিজেদের মাল ও জান দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে। এরাই হ’ল সত্যনিষ্ঠ’ (হুজুরাত ৪৯/১৫)।
.
ﻋَﻦْ ﺃَﻧَﺲٍ - ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ - ﻗﺎﻝ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ - ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ﺟَﺎﻫِﺪُﻭﺍ ﺍﻟـﻤُﺸْﺮِﻛِﻴﻦَ ﺑِﺄَﻣْﻮَﺍﻟِﻜُﻢْ ﻭَﺃَﻧْﻔُﺴِﻜُﻢْ ﻭَﺃَﻟْﺴِﻨَﺘِﻜُﻢ ْ.
আনাস রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : “তোমরা মুশরিকদের সাথে জিহাদ কর, তোমাদের সম্পদ, নফস ও জবান দ্বারা”। (আবু দাঊদ, নাসাঈ, দারেমী, মিশকাত হা/৩৮২১, মুসনাদ ইমাম আহমদ, মুসনাদে আনাস ইব্ন মালেক : ১১৭৯৮)
.
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) অন্যত্র বলেন, আমার পূর্বে আল্লাহ এমন কোন নবীকে তার উম্মতের মধ্যে পাঠাননি, যাদের মধ্যে তার একদল ‘হাওয়ারী’ ও মুখলেছ সাথী ছিল না। যারা তার সুন্নাতের উপর আমল করত ও তার আদেশ মেনে চলত। অতঃপর তাদের স্থলে এমন লোকেরা এল, যারা এমন কথা বলত যা তারা করত না এবং এমন কাজ করত যা তাদের আদেশ করা হয়নি। (আমার উম্মতের মধ্যেও এরূপ হবে) অতএব
ﻣَﻦْ ﺟَﺎﻫَﺪَﻫُﻢْ ﺑِﻴَﺪِﻩِ ﻓَﻬُﻮَ ﻣُﺆْﻣِﻦٌ ﻭَﻣَﻦْ ﺟَﺎﻫَﺪَﻫُﻢْ ﺑِﻠِﺴَﺎﻧِﻪِ ﻓَﻬُﻮَ ﻣُﺆْﻣِﻦٌ ﻭَﻣَﻦْ ﺟَﺎﻫَﺪَﻫُﻢْ ﺑِﻘَﻠْﺒِﻪِ ﻓَﻬُﻮَ ﻣُﺆْﻣِﻦٌ ﻭَﻟَﻴْﺲَ ﻭَﺭَﺍﺀَ ﺫَﻟِﻚَ ﻣِﻦَ ﺍﻹِﻳﻤَﺎﻥِ ﺣَﺒَّﺔُ ﺧَﺮْﺩَﻝٍ
যে ব্যক্তি তাদের বিরুদ্ধে হাত দ্বারা জিহাদ করবে সে মুমিন, যে ব্যক্তি যবান দ্বারা জিহাদ করবে সে মুমিন, যে ব্যক্তি অন্তর দ্বারা জিহাদ করবে সে মুমিন। এরপরে সরিষাদানা পরিমাণও ঈমান নেই’। (মুসলিম হা/৫০; মিশকাত হা/১৫৭ ‘ঈমান’ অধ্যায়, ‘কিতাব ও সুন্নাহ্কে আঁকড়ে ধরা’ অনুচ্ছেদ।)
.
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,
ﻣَﻦْ ﺭَﺃَﻯ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﻣُﻨْﻜَﺮًﺍ ﻓَﻠْﻴُﻐَﻴِّﺮْﻩُ ﺑِﻴَﺪِﻩِ ﻓَﺈِﻥْ ﻟَﻢْ ﻳَﺴْﺘَﻄِﻊْ ﻓَﺒِﻠِﺴَﺎﻧِﻪِ ﻓَﺈِﻥْ ﻟَﻢْ ﻳَﺴْﺘَﻄِﻊْ ﻓَﺒِﻘَﻠْﺒِﻪِ ﻭَﺫَﻟِﻚَ ﺃَﺿْﻌَﻒُ ﺍﻹِﻳﻤَﺎﻥِ
‘তোমাদের মধ্যে যখন কেউ কোন অন্যায় হ’তে দেখে, তখন সে যেন তা হাত দিয়ে প্রতিহত করে। তাতে সক্ষম না হ’লে যবান দিয়ে প্রতিবাদ করবে। তাতেও সক্ষম না হ’লে অন্তর দিয়ে ঘৃণা করবে। আর এটা হ’ল দুর্বলতম ঈমান’। (মুসলিম হা/৪৯, মিশকাত হা/৫১৩৭)
.
⚔কিতালের অর্থ ও সংজ্ঞা
.
কিতাল শব্দের শাব্দিক বিশ্লেষণ
.
ক্বিতাল (ﻗِﺘَﺎﻝ) শব্দটি ( ﻕ ﺕ ﻝ ) ধাতু থেকে এসেছে। শব্দটি মাদ্বি (অতীত কাল) এর ছিগা হল ﻗَﺘَﻞَ (ক্বাতালা) এবং মুদ্বারি (বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কাল) এর ছিগা হল ﻳَﻘْﺘُﻞُ (ইয়াক্বতুলু) যার অর্থ হত্যা করা, খুন করা, মেরে ফেলা, ধ্বংস করা, নিধন করা, নষ্ট করা, শেষ করা, তীব্রতা খর্ব করা, অবসান ঘটানো, নিবৃত্ত করা। এর Verbal Noun ﻗَﺘْﻞ (কাতল) অর্থ হত্যা, খুন, নিধন, ধ্বংস। এর active participle ﻗَﺎﺗِﻞ (কাতিল) খুনী, ঘাতক, হত্যাকারী, নিধনকারী।
এর form II মাদ্বি (অতীত কাল) এর ছিগা হল ﻗَﺘَﻞَ (ক্বাত্তালা) এবং form II মুদ্বারি (বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কাল) এর ছিগা হল ﻳُﻘَﺘِّﻞُ (ইউক্বাত্তিলু) যার অর্থ অনেককে হত্যা করা, অনেককে খুন করা, হত্যাযজ্ঞ চালানো, লাঞ্জিত করা, অপদস্থ করা। নিধনকারী। এর Noun ﻗِﺘْﻞ (ক্বিতল) অর্থ শত্রু, দুশমন, বৈরী, বিপক্ষ।
এর form III মাদ্বি (অতীত কাল) এর ছিগা হল ﻗَﺎﺗَﻞَ (ক্বা-তালা) এবং form III মুদ্বারি (বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কাল) এর ছিগা হল ﺗُﻘَﺎﺗِﻞُ (ইউক্বা-তিলু) অর্থ যুদ্ধ করা, লড়াই করা, খুনাখুনী করা, শত্রুতা করা। এর Noun ﻗِﺘَﺎﻝ (ক্বিতাল) অর্থ যুদ্ধ, লড়াই, সমর, খুনাখুনি, হানাহানি।
ইসলামী পরিভাষায় (ক্বিতাল) ﻗِﺘَﺎﻝ অর্থ আল্লাহর পথে কুফরী শক্তির বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ করা।
.
জিহাদ (ﺟِﻬَﺎﺩ) শব্দটি ( ﺝ ﻩ ﺩ ) ধাতু থেকে এসেছে। যা এ তিনটি ধাতু দিয়ে কুরআনে ৪১ বার এসেছে। form III verb ﺟَﺎﻫَﺪَ (জা-হাদা) রূপে এসেছে ২৭ (সাতাশ) বার। Noun ﺟِﻬَﺎﺩ (জিহাদ) রূপে এসেছে ৪ (চার) বার। Noun ﺟُﻬْﺪ (জুহদ) রূপে এসেছে ১ (এক) বার। Noun ﺟَﻬْﺪ (জাহদ) রূপে এসেছে ৫ (পাঁচ) বার। form III active participle ﻣُﺠَﺎﻫِﺪ (মুজাহেদ) রূপে এসেছে ৪ (চার) বার।
এর মাদ্বি (অতীত কাল) এর ছিগা হল ﺟَﻬَﺪَ (জাহাদা) এবং মুদ্বারি (বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কাল) এর ছিগা হল ﻳَﺠْﻬَﺪُ (ইয়াজহাদু) অর্থ চেষ্টা করা, পরিশ্রম করা, কষ্ট করা, কষ্ট দেওয়া, ক্লান্ত করা। এর active participle ﺟَﺎﻫِﺪ (জাহিদ) অর্থ চেষ্টাকারী, প্রচেষ্টাকারী, পরিশ্রমী। এর Noun ﺟُﻬْﺪ (জুহদ) অর্থ সাধ্য, সামর্থ্য, শক্তি, ক্ষমতা, কষ্ট, ক্লান্তি, পরিশ্রম প্রচেষ্টা। Verval Noun ﺟَﻬْﺪ (জাহদ) এর অর্থ প্রচেষ্টা, উদ্যোগ, পরিশ্রম, কষ্ট, ক্লান্তি।
এর form III মাদ্বি (অতীত কাল) এর ছিগা হল ﺟَﺎﻫَﺪَ (জা-হাদা) এবং form III মুদ্বারি (বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কাল) এর ছিগা হল ﻳُﺠَﺎﻫِﺪُ (ইউজা-হেদু) অর্থ চেষ্টা করা, সাধনা করা, সংগ্রাম করা, জিহাদ করা। এর noun ﺟِﻬَﺎﺩ (জিহাদ) অর্থ জেহাদ, ন্যায়ের জন্য সংগ্রাম, প্রচেষ্টা, সাধনা, যুদ্ধ। form III active participle ﻣُﺠَﺎﻫِﺪ (মুজাহেদ) অর্থ ন্যায়ের জন্য সংগ্রামকারী, জেহাদকারী, মুজাহিদ, সংগ্রামী।
.
ইসলামী পরিভাষায় জিহাদ(جِهَاد) অর্থ: আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার জন্য বাতিলের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো’।
.
মুশরিক ও কুফরী শক্তির বিরুদ্ধে মুমিনের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নিয়োজিত করাকে ‘জিহাদ’ বলে। জিহাদ হলো ইসলামের সর্বোচ্চ চূড়া।
.
ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেন,
ﺍﻟْﺠِﻬَﺎﺩُ ﺷَﺮْﻋًﺎ ﺑَﺬْﻝُ ﺍﻟْﺠُﻬْﺪِ ﻓِﻲ ﻗِﺘَﺎﻝِ ﺍﻟْﻜُﻔَّﺎﺭِ ﻭَﻳُﻄْﻠَﻖُ ﺃَﻳْﻀًﺎ ﻋَﻠَﻰ ﻣُﺠَﺎﻫَﺪَﺓِ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲِ ﻭَﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥِ ﻭَﺍﻟْﻔُﺴَّﺎﻕِ
শারঈ পরিভাষায় জিহাদ (ﺟِﻬَﺎﺩ) হলো, কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নিয়োজিত করা। এর দ্বারা নফস, শয়তান ও ফাসিকদের বিরুদ্ধে জিহাদকেও বুঝানো হয়। [আহমাদ ইবনু হাজার আসক্বালানী, ফাৎহুল বারী শরহ ছহীহুল বুখারী (কায়রো : ১৪০৭/১৯২৭) ‘জিহাদ’ অধ্যায় ৬/৫ পৃঃ।]
.
মোল্লা আলী ক্বারী (রহঃ) বলেন, জিহাদ(ﺟِﻬَﺎﺩ) অর্থ কাফেরদের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো অথবা মাল দ্বারা, পরামর্শ দ্বারা, দলবৃদ্ধি দ্বারা কিংবা অন্য যেকোন পন্থায় কুফরী শক্তির বিরুদ্ধে সার্বিক সহযোগিতা করা। তিনি বলেন, জিহাদ (ﺟِﻬَﺎﺩ) হলো ‘ফরযে কিফায়াহ’। কেউ সেটা করলে অন্যের উপর থেকে দায়িত্ব নেমে যায়। [মোল্লা আলী ক্বারী, মিরক্বাত শরহ মিশকাত (মুলতান : ইশ‘আতুল মা‘আরেফ, ১৩৮৬/১৯৬৬) ‘জিহাদ’ অধ্যায়, ৭/২৬৪ পৃঃ।)]
.
🗒জিহাদের প্রকারভেদ
.
জিহাদকে ৩টি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে।
.
(১) নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ 📌
.
মহান আল্লাহর বাণী-
ﻭَﻣَﻦْ ﺟَﺎﻫَﺪَ ﻓَﺈِﻧَّﻤَﺎ ﻳُﺠَﺎﻫِﺪُ ﻟِﻨَﻔْﺴِﻪِ ۚ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻟَﻐَﻨِﻲٌّ ﻋَﻦِ ﺍﻟْﻌَﺎﻟَﻤِﻴﻦَ
আর যে (জিহাদ করে) চেষ্টা-সাধনা করে সে তো তার নাফসের জন্য (জিহাদ করে) চেষ্টা-সাধনা করে; নিশ্চয় আল্লাহ সৃষ্টি জগত থেকে প্রয়োজনমুক্ত। (আনকাবুত, ২৯/৬)
.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন;
ﺍَﻓْﻀَﻞُ ﺍﻟْﺠِﻬَﺎﺩِ ﻣَﻦْ ﺟَﺎﻫَﺪَ ﻧَﻔْﺴَﻪُ ﻓِﻲْ ﺫَﺍﺕِ ﺍﻟﻠﻪ ﻋَﺰَّ ﻭَ ﺟَﻞَّ
সর্বশ্রেষ্ঠ জিহাদ হল, মহিমান্বিত ও সম্মানিত মহান আল্লাহর জন্য স্বীয় নাফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করা। (তিরমিযী,; ত্বাবারানী,; সিলসিলা ছহীহা: হা/১৪৯১)
.
ﺃَﻓْﻀَﻞُ ﺍﻟْﺠِﻬَﺎﺩِ ﺃَﻥْ ﻳُﺠَﺎﻫِﺪَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﻧَﻔْﺴَﻪُ ﻭَﻫَﻮَﺍﻩُ
কোন ব্যক্তির স্বীয় নাফস ও কু-প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে জিহাদ করাই হল সর্বোত্তম জিহাদ। (ছহীহুল জামে: হা- ১০৯৯)
.
ফাযালাহ বিন ওবায়েদ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
ﺍﻟْﻤُﺠَﺎﻫِﺪُ ﻣَﻦْ ﺟَﺎﻫَﺪَ ﻧَﻔْﺴَﻪُ ﻟِﻠَّﻪِ
মুজাহিদ সেই ব্যক্তি যে আল্লাহর জন্য স্বীয় নাফসের বিরুদ্ধে (জিহাদ করে) চেষ্টা-সাধনা করে। (তিরমিযী হা/১৬২১, আহমাদ: হা/২২৮২৬; ইবনু হিববান: হা/৪৬২৪)
.
ছাহেবে তুহফাহ বলেন, এর অর্থ, যে ব্যক্তি তার প্রবৃত্তিকে দমন করে এবং পাপ থেকে বিরত হয়ে আল্লাহর আনুগত্যে নিজেকে ধরে রাখে। আর এটাই হ’ল সকল জিহাদের মূল ( ﻭﺟﻬﺎﺩﻫﺎ ﺍﺻﻞ ﻛﻞ ﺟﻬﺎﺩ )। কেননা যে ব্যক্তি নিজের নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করতে পারে না, সে ব্যক্তি বাইরে শত্রুর বিরুদ্ধে জিহাদ করতে পারে না’। (তুহফাতুল আহওয়াযী শরহ তিরমিযী, হা/১৬৭১-এর ব্যাখ্যা)
.
মহান আল্লাহর বানী-
ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺟَﺎﺀَﺕِ ﺍﻟﻄَّﺎﻣَّﺔُ ﺍﻟْﻜُﺒْﺮَﻯ ﻳَﻮْﻡَ ﻳَﺘَﺬَﻛَّﺮُ ﺍﻹﻧْﺴَﺎﻥُ ﻣَﺎ ﺳَﻌَﻰ ﻭَﺑُﺮِّﺯَﺕِ ﺍﻟْﺠَﺤِﻴﻢُ ﻟِﻤَﻦْ ﻳَﺮَﻯ ﻓَﺄَﻣَّﺎ ﻣَﻦْ ﻃَﻐَﻰ ﻭَﺁﺛَﺮَ ﺍﻟْﺤَﻴَﺎﺓَ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟْﺠَﺤِﻴﻢَ ﻫِﻲَ ﺍﻟْﻤَﺄْﻭَﻯ ﻭَﺃَﻣَّﺎ ﻣَﻦْ ﺧَﺎﻑَ ﻣَﻘَﺎﻡَ ﺭَﺑِّﻪِ ﻭَﻧَﻬَﻰ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲَ ﻋَﻦِ ﺍﻟْﻬَﻮَﻯ ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﻫِﻲَ ﺍﻟْﻤَﺄْﻭَﻯ
অতঃপর যখন মহাবিপর্যয় (কেয়ামত) উপস্থিত হবে, সেদিন মানুষ যা করেছে তা স্মরণ করবে, আর দর্শকদের জন্য জাহান্নামকে প্রকাশ করা হবে। অতঃপর যে ব্যক্তি সীমালংঘন করেছে, আর দুনিয়ার জীবনকে অগ্রাধিকার দিয়েছে, নিশ্চয় জাহান্নাম হবে তার আবাসস্থল। পক্ষান্তরে যে তার রবের সামনে দাঁড়াতে ভয় করেছে এবং প্রবৃত্তি (খেয়াল-খুশী) হতে নাফসকে (নিজেকে) বিরত রেখেছে তবে অবশ্যই জান্নাত হবে তার আবাসস্থল। [আন-নাযি’আত, ৭৯/৩৪-৪১]
.
(২) শয়তানের বিরুদ্ধে জিহাদ 📚
.
শয়তান জিন ও ইনসান উভয়ের মধ্য থেকে হ’তে পারে (নাস ১১৪/৬)।
এদের দিনরাতের কাজ হ’ল বিভিন্ন ধোঁকার মাধ্যমে মুমিনকে পথভ্রষ্ট করা। আল্লাহ বলেন,
ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﻳُﻘَﺎﺗِﻠُﻮﻥَ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻛَﻔَﺮُﻭﺍ ﻳُﻘَﺎﺗِﻠُﻮﻥَ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻄَّﺎﻏُﻮﺕِ ﻓَﻘَﺎﺗِﻠُﻮﺍ ﺃَﻭْﻟِﻴَﺎﺀَ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥِ ﺇِﻥَّ ﻛَﻴْﺪَ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥِ ﻛَﺎﻥَ ﺿَﻌِﻴﻔًﺎ
যারা ঈমান এনেছে তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে আর যারা কুফরী করেছে তারা তাগূতের পথে লড়াই করে সুতরাং তোমরা লড়াই কর শয়তানের বন্ধুদের বিরুদ্ধে, নিশ্চয় শয়তানের চক্রান্ত দুর্বল। আন-নিসা, ৪/৭৬
.
ﻭَﻛَﺬَﻟِﻚَ ﺟَﻌَﻠْﻨَﺎ ﻟِﻜُﻞِّ ﻧَﺒِﻲٍّ ﻋَﺪُﻭًّﺍ ﺷَﻴَﺎﻃِﻴﻦَ ﺍﻟْﺈِﻧْﺲِ ﻭَﺍﻟْﺠِﻦِّ ﻳُﻮﺣِﻲ ﺑَﻌْﻀُﻬُﻢْ ﺇِﻟَﻰ ﺑَﻌْﺾٍ ﺯُﺧْﺮُﻑَ ﺍﻟْﻘَﻮْﻝِ ﻏُﺮُﻭﺭًﺍ
‘এমনিভাবে আমরা প্রত্যেক নবীর জন্য শত্রু নিযুক্ত করেছি মানুষ ও জিন থেকে একদল শয়তানকে। যারা ধোঁকা দেওয়ার জন্য একে অপরকে কারুকার্য খচিত কথা বলে’ (আন‘আম ৬/১১২)।
.
এদের থেকে বেঁচে থাকার জন্য আল্লাহ স্বীয় রাসূলকে বলেন,
ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺭَﺃَﻳْﺖَ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﺨُﻮﺿُﻮﻥَ ﻓِﻲ ﺁﻳَﺎﺗِﻨَﺎ ﻓَﺄَﻋْﺮِﺽْ ﻋَﻨْﻬُﻢْ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﺨُﻮﺿُﻮﺍ ﻓِﻲ ﺣَﺪِﻳﺚٍ ﻏَﻴْﺮِﻩِ
‘যখন তুমি ঐসব লোকদের দেখবে যে, আমার আয়াত সমূহে ছিদ্রান্বেষণে লিপ্ত হয়েছে, তখন তুমি তাদেরকে এড়িয়ে চলো, যে পর্যন্ত না তারা অন্য কথায় লিপ্ত হয়’ (আন‘আম ৬/৬৮)।
.
(৩) কাফির-মুশরিক ও ফাসিক-মুনাফিকের বিরুদ্ধে জিহাদ ⚔
.
আল্লাহ বলেন,
ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺟَﺎﻫِﺪِ ﺍﻟْﻜُﻔَّﺎﺭَ ﻭَﺍﻟْﻤُﻨَﺎﻓِﻘِﻲﻥَ ﻭَﺍﻏْﻠُﻆْ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ ﻭَﻣَﺄْﻭَﺍﻫُﻢْ ﺟَﻬَﻨَّﻢُ ﻭَﺑِﺌْﺲَ ﺍﻟْﻤَﺼِﻴﺮُ
‘হে নবী! তুমি জিহাদ কর কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে এবং তাদের উপরে কঠোর হও। ওদের ঠিকানা হ’ল জাহান্নাম। আর কতইনা মন্দ ঠিকানা সেটি’ (তওবা ৯/৭৩; তাহরীম ৬৬/৯)।
.
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, কাফিরদের বিরুদ্ধে জিহাদ হবে অস্ত্রের দ্বারা এবং মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ হবে যবান দ্বারা এবং অন্যান্য পন্থায় কঠোরতা অবলম্বনের দ্বারা’।
.
মুনাফিক সর্দার আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইকে সকল নষ্টের মূল জেনেও রাসূল (ছাঃ) তাকে হত্যার নির্দেশ দেননি তার বাহ্যিক ইসলামের কারণে।
ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ কর হাত দ্বারা, না পারলে যবান দ্বারা, না পারলে ওদেরকে এড়িয়ে চল’। ইবনুল ‘আরাবী বলেন, যবান দ্বারা দলীল কায়েম করার বিষয়টি হ’ল স্থায়ী জিহাদ’। [কুরতুবী, সূরা তওবা ৭৩ আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য; ৮/১৮৭ পৃঃ।]
.
📜 জিহাদের মাধ্যম চারটি :
.
(১) অন্তর দিয়ে (২) যবান দিয়ে (৩) মাল দিয়ে এবং (৪) অস্ত্রের মাধ্যমে।
.
আল্লাহর বাণী মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া জিহাদের একটি অংশ আর এটাকে ‘বড় জিহাদ’ হিসাবে উল্লেখ করে হয়েছে। আল্লাহ স্বীয় রাসূলকে বলেন,
ﻓَﻼَ ﺗُﻄِﻊِ ﺍﻟْﻜَﺎﻓِﺮِﻳْﻦَ ﻭَﺟَﺎﻫِﺪْ ﻫُﻢْ ﺑِﻪِ ﺟِﻬَﺎﺩًﺍ ﻛَﺒِﻴْﺮًﺍ
তুমি কাফিরদের আনুগত্য করো না। বরং তাদের বিরুদ্ধে কুরআন দ্বারা বড় জিহাদ চালিয়ে যাও।। (ফুরক্বান ২৫/৫২)
.
আল্লাহ বলেন-
ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﺑِﺎﻟﻠﻪِ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟِﻪِ ﺛُﻢَّ ﻟَﻢْ ﻳَﺮْﺗَﺎﺑُﻮﺍ ﻭَﺟَﺎﻫَﺪُﻭﺍ ﺑِﺄَﻣْﻮَﺍﻟِﻬِﻢْ ﻭَﺃَﻧْﻔُﺴِﻬِﻢْ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺃُﻭﻟَﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﺍﻟﺼَّﺎﺩِﻗُﻮﻥ
‘মুমিন কেবল তারাই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান এনেছে, অতঃপর তাতে সন্দেহ পোষণ করেনি। আর নিজেদের মাল ও জান দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে। এরাই হ’ল সত্যনিষ্ঠ’ (হুজুরাত ৪৯/১৫)।
.
ﻋَﻦْ ﺃَﻧَﺲٍ - ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ - ﻗﺎﻝ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ - ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ﺟَﺎﻫِﺪُﻭﺍ ﺍﻟـﻤُﺸْﺮِﻛِﻴﻦَ ﺑِﺄَﻣْﻮَﺍﻟِﻜُﻢْ ﻭَﺃَﻧْﻔُﺴِﻜُﻢْ ﻭَﺃَﻟْﺴِﻨَﺘِﻜُﻢ ْ.
আনাস রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : “তোমরা মুশরিকদের সাথে জিহাদ কর, তোমাদের সম্পদ, নফস ও জবান দ্বারা”। (আবু দাঊদ, নাসাঈ, দারেমী, মিশকাত হা/৩৮২১, মুসনাদ ইমাম আহমদ, মুসনাদে আনাস ইব্ন মালেক : ১১৭৯৮)
.
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) অন্যত্র বলেন, আমার পূর্বে আল্লাহ এমন কোন নবীকে তার উম্মতের মধ্যে পাঠাননি, যাদের মধ্যে তার একদল ‘হাওয়ারী’ ও মুখলেছ সাথী ছিল না। যারা তার সুন্নাতের উপর আমল করত ও তার আদেশ মেনে চলত। অতঃপর তাদের স্থলে এমন লোকেরা এল, যারা এমন কথা বলত যা তারা করত না এবং এমন কাজ করত যা তাদের আদেশ করা হয়নি। (আমার উম্মতের মধ্যেও এরূপ হবে) অতএব
ﻣَﻦْ ﺟَﺎﻫَﺪَﻫُﻢْ ﺑِﻴَﺪِﻩِ ﻓَﻬُﻮَ ﻣُﺆْﻣِﻦٌ ﻭَﻣَﻦْ ﺟَﺎﻫَﺪَﻫُﻢْ ﺑِﻠِﺴَﺎﻧِﻪِ ﻓَﻬُﻮَ ﻣُﺆْﻣِﻦٌ ﻭَﻣَﻦْ ﺟَﺎﻫَﺪَﻫُﻢْ ﺑِﻘَﻠْﺒِﻪِ ﻓَﻬُﻮَ ﻣُﺆْﻣِﻦٌ ﻭَﻟَﻴْﺲَ ﻭَﺭَﺍﺀَ ﺫَﻟِﻚَ ﻣِﻦَ ﺍﻹِﻳﻤَﺎﻥِ ﺣَﺒَّﺔُ ﺧَﺮْﺩَﻝٍ
যে ব্যক্তি তাদের বিরুদ্ধে হাত দ্বারা জিহাদ করবে সে মুমিন, যে ব্যক্তি যবান দ্বারা জিহাদ করবে সে মুমিন, যে ব্যক্তি অন্তর দ্বারা জিহাদ করবে সে মুমিন। এরপরে সরিষাদানা পরিমাণও ঈমান নেই’। (মুসলিম হা/৫০; মিশকাত হা/১৫৭ ‘ঈমান’ অধ্যায়, ‘কিতাব ও সুন্নাহ্কে আঁকড়ে ধরা’ অনুচ্ছেদ।)
.
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,
ﻣَﻦْ ﺭَﺃَﻯ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﻣُﻨْﻜَﺮًﺍ ﻓَﻠْﻴُﻐَﻴِّﺮْﻩُ ﺑِﻴَﺪِﻩِ ﻓَﺈِﻥْ ﻟَﻢْ ﻳَﺴْﺘَﻄِﻊْ ﻓَﺒِﻠِﺴَﺎﻧِﻪِ ﻓَﺈِﻥْ ﻟَﻢْ ﻳَﺴْﺘَﻄِﻊْ ﻓَﺒِﻘَﻠْﺒِﻪِ ﻭَﺫَﻟِﻚَ ﺃَﺿْﻌَﻒُ ﺍﻹِﻳﻤَﺎﻥِ
‘তোমাদের মধ্যে যখন কেউ কোন অন্যায় হ’তে দেখে, তখন সে যেন তা হাত দিয়ে প্রতিহত করে। তাতে সক্ষম না হ’লে যবান দিয়ে প্রতিবাদ করবে। তাতেও সক্ষম না হ’লে অন্তর দিয়ে ঘৃণা করবে। আর এটা হ’ল দুর্বলতম ঈমান’। (মুসলিম হা/৪৯, মিশকাত হা/৫১৩৭)
.
⚔কিতালের অর্থ ও সংজ্ঞা
.
কিতাল শব্দের শাব্দিক বিশ্লেষণ
.
ক্বিতাল (ﻗِﺘَﺎﻝ) শব্দটি ( ﻕ ﺕ ﻝ ) ধাতু থেকে এসেছে। শব্দটি মাদ্বি (অতীত কাল) এর ছিগা হল ﻗَﺘَﻞَ (ক্বাতালা) এবং মুদ্বারি (বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কাল) এর ছিগা হল ﻳَﻘْﺘُﻞُ (ইয়াক্বতুলু) যার অর্থ হত্যা করা, খুন করা, মেরে ফেলা, ধ্বংস করা, নিধন করা, নষ্ট করা, শেষ করা, তীব্রতা খর্ব করা, অবসান ঘটানো, নিবৃত্ত করা। এর Verbal Noun ﻗَﺘْﻞ (কাতল) অর্থ হত্যা, খুন, নিধন, ধ্বংস। এর active participle ﻗَﺎﺗِﻞ (কাতিল) খুনী, ঘাতক, হত্যাকারী, নিধনকারী।
এর form II মাদ্বি (অতীত কাল) এর ছিগা হল ﻗَﺘَﻞَ (ক্বাত্তালা) এবং form II মুদ্বারি (বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কাল) এর ছিগা হল ﻳُﻘَﺘِّﻞُ (ইউক্বাত্তিলু) যার অর্থ অনেককে হত্যা করা, অনেককে খুন করা, হত্যাযজ্ঞ চালানো, লাঞ্জিত করা, অপদস্থ করা। নিধনকারী। এর Noun ﻗِﺘْﻞ (ক্বিতল) অর্থ শত্রু, দুশমন, বৈরী, বিপক্ষ।
এর form III মাদ্বি (অতীত কাল) এর ছিগা হল ﻗَﺎﺗَﻞَ (ক্বা-তালা) এবং form III মুদ্বারি (বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কাল) এর ছিগা হল ﺗُﻘَﺎﺗِﻞُ (ইউক্বা-তিলু) অর্থ যুদ্ধ করা, লড়াই করা, খুনাখুনী করা, শত্রুতা করা। এর Noun ﻗِﺘَﺎﻝ (ক্বিতাল) অর্থ যুদ্ধ, লড়াই, সমর, খুনাখুনি, হানাহানি।
ইসলামী পরিভাষায় (ক্বিতাল) ﻗِﺘَﺎﻝ অর্থ আল্লাহর পথে কুফরী শক্তির বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ করা।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন